কয়েক মাইল দূরে গিয়ে থ্যালাসেমিয়া রোগীকে রক্তদান করলেন এক সহৃদয় ব্যক্তি
শিব শঙ্কর চ্যাটার্জি, নিউজ অনলাইন: থ্যালাসেমিয়াতে আক্রান্ত এক পিতৃহারা যুবতীর রোগীর রক্তের প্রয়োজনীয়তার কথা জানতে পেরে নিজের দোকান ফেলে রেখে কয়েক মাইল দূরে থাকা হাসপাতালে গিয়ে রক্তদান করলেন পতিরাম নাগরিক ও যুব সমাজের সদস্য বিলাশ পাল নামে এক মোবাইল বিক্রেতা।
এমনিতেই করোনা পরিস্থিতিতে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার হাসপাতাল গুলিতে রক্তের আকাল চলছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে জেলায় জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের রক্তের আকাল মেটাতে প্রতিদিন ১০ জন করে জেলার পুলিশ বাহিনীর জওয়ান হাসপাতাল গুলিতে গিয়ে স্বেচ্ছায় নিজেদের রক্তদান করে রক্তের সংকট দূর করবার প্রয়াস চালাচ্ছে।
এদিকে আজ সকালে পতিরাম নাগরিক ও যুব সমাজ মঞ্চের সদস্যদের কাছে খবর আসে। তাদের এলাকার জাখিরপুর গ্রামের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত পিতৃহারা এক গরিব পরিবারের ১৭ বছরের মেয়ের জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন। অথচ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রক্তের সংকট থাকার দরুন তাকে রক্ত দেওয়া সম্ভবপর হচ্ছেনা। কিন্ত এই মুহুর্তে তাকে ফ্রেস রক্ত না দিলে মেয়েটির প্রান সংশয়ের আশংকা রয়েছে। যদিও পতিরাম নাগরিক ও যুব সমাজ মঞ্চের তরফে এই করোনা সংকট কালে চারবার নিজেরা স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের মধ্যমে তাদের ২২ সদস্যই স্বেচ্ছায় রক্তদান করে ফেলায় এই খবর পাওয়ায় তারা সমস্যার মধ্যে পড়েন। তাই বলে তো মেয়েটিকে প্রান সংশয়ের মুখেও ঠেলে দিতে পারেন না তারা। কিন্তু ২২ জন সদস্য ছাড়াও আর যে সব সদস্য রয়েছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ রক্তদিতে আগ্রহী হলে ও তাদের সাথে রক্তের গ্রুপ মিল খায় না। এই সময় সাত সকালে সবে নিজের মোবাইল দোকান ধুপ ধুনো দিয়ে খুলে বসেছে তাদের এক সদস্য বিলাশ পাল। তার রক্তের ভ্রুপ আর ওই থ্যালাসেমিয়াতে আক্রান্ত রোগীর রক্তের গ্রুপ এক তা জানতে পেরেই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দোকান ফেলে রেখেই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রক্তদান করতে ছুটলেন ওই মোবাইল ব্যবসায়ী বিলাশ পাল।শেষ মেষ তার স্বেচ্ছায় দান করা রক্তেই আজ প্রান সংশয়ের মুখ থেকে নিজেকে ফিরে পেলেন জাখিরপুর গ্রামের পিতৃহারা তরুনী মুক্তা খাতুন। পতিরাম নাগরিক ও যুব সমাজ মঞ্চের সদস্য বিলাশ পালকে তার এই মহৎ কাজের জন্য এলাকার মানুষেরা তাকে অকুন্ঠ সাধুবাদ জানিয়েছে।
No comments