বছর আটের এক অসুস্থ কন্যার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন এক শিক্ষক
শিব শঙ্কর চ্যাটার্জি, নিউজ অনলাইন, বালুরঘাট: এক দুস্থ অসহায় পরিবারের একটি আট বছরের অসুস্থ মেয়েকে সুস্থ করে তোলার ব্যাপারে সারা বছরের ওষুধের খরচের যাবতীয় আর্থিক সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিল এক সহৃদয় শিক্ষক।ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের শান্তিময় ঘোষ কলোনী পাড়াতে।
শান্তিময় কলোনীর বাসিন্দা গোপাল সরকার আখের রস পেসাই করে রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি করাই যার একমাত্র পেশা। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের জেরে সেই আখের রস বিক্রি বন্ধ হওয়ায় পরিবার নিয়ে দিন গুজরান করাই তার দায় হয়ে পড়ে। অথচ ঘরে তার অসুস্থ আট বছরের মেয়েকে সুস্থ্য রাখার জন্য মাসে ১২০০ টাকার অসুধ প্রয়োজন। একদিকে লকডাউনের জেরে দিন আনা দিন খাওয়াই পরিবার নিয়ে দুষ্কর হয়ে দাড়িয়েছে ।অন্য দিকে তখন অসুধ কিনতে না পেরে মেয়েকে সুস্থ্য রাখাই তাকে ধীরে ধীরে অসহায় করে তুলেছে। তার এই অসহয়তার কথা জানতে পেরে এক যুবক সোসাল মিডিয়াতে মেয়েটিকে বাচিয়ে রাখার জন্য সাহায্যের হাত বাড়ানোর আবেদন জানায়। সোসাল মিডিয়ায় সেই পোস্ট দেখতে পেয়েই ওই অসুস্থ মেয়েটিকে সুস্থ করে তুলবার জন্য তার অসুধের যাবতীয় ব্যায়ভার নিজের কাধে তুলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বালুরঘাট শহরের এক শিক্ষক।সৌগত চক্রবর্তী।
’যাঁরা প্রতিদিন রোজগারের আশায় বাড়ির বাইরে যান, এই লকডাউনে সমস্যা হতে পারে। তবে তাদের সমস্যা মেটানোর জন্য যারা মাস শেষে বেতন পাই, তাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের বেতন থেকে কিছুটা সাহায্য এই সময় সেই ব্যক্তিদের করতে হবে যারা লকডাউনের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। চরম বিপাকে পড়েছেন দুঃস্থ দরিদ্র মানুষেরা।মানুষ এখন ঘোর বিপদের মধ্যে পড়েছেন। তাঁদের পাশে থাকাটাই আমাদের কর্তব্য।এই মনোভাব থেকেই সৌগত চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়ানো।
তিন বছর আগে গোপাল সরকারের মেয়ে গোলাপি সরকারের মাথায় নারকেল পড়ে মাথার হাড় ভেঙে যায়। তাকে অপারেশন করে সুস্থ করা হলেও তারপর থেকে বারোশো টাকা দামের ওষুধ প্রতি মাসে খেতে হয়। সোসাল মিডিয়ায় সে খবর জেনে গতকাল রাত্রে তাদের সাহায্য করবার জন্য স্কুল শিক্ষক সৌগত চক্রবর্তী তাদের দিকে মেয়েটির ৬ মাসের ওষুধ কিনে তাদের হাতে তুলে দিলেন। পাশাপাশি আগামী এক বছরের ওষুধ কিনে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন ওই শিক্ষক।এছাড়াও মেয়েটির হাতে তিনি কিছু উপহারও তুলে দেন যা পেয়ে খুশি ছোট্ট গোলাপী।
অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলছি আমরা। সবাই মিলে টিম হিসেবে না লড়লে এই ম্যাচ জিততে পারব না।।আপনার কাছাকাছি অন্তত একজন মানুষকেও এই বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। এভাবে সবাই সাহায্যের হাত বাড়ালে দেখবেন, পুরো সমাজেই তার প্রভাব পড়ছে। আর এভাবেই এই কঠিন সময়ে সবাই একসঙ্গে লড়াই করতে পারবে।”।আপনার কাছাকাছি অন্তত একজন মানুষকেও এই বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। এভাবে সবাই সাহায্যের হাত বাড়ালে দেখবেন, পুরো সমাজেই তার প্রভাব পড়ছে। আর এভাবেই এই কঠিন সময়ে সবাই একসঙ্গে লড়াই করতে পারবে। সেই বিখ্যাত গান.. উই শ্যাল ওভার কাম...
No comments