করোনার প্রকোপে দক্ষিন দিনাজপুরের বিখ্যাত শতাব্দী প্রাচীন বিনশিরার রথযাত্রা স্থগিত
শিব শঙ্কর চ্যাটার্জি, নিউজ অনলাইন: লকডাউনের জেরে কোপ পড়ল বাঙালির প্রিয় রথযাত্রাতেও। করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের জেরে দীর্ঘ কয়েক যুগ পর ছেদ পড়ল দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বিখ্যাত শতাব্দী প্রাচীন বিনশিরার রথযাত্রার।জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এ বছর রথযাত্রা উৎসব স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল পারিবারিক মন্দির কর্তৃপক্ষ।পাশাপাশি আজ ছিল জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা। লকডাউনের বিধির জেরে অনান্যবারের মত জাকজমক মধ্যে না গিয়ে শুধু মাত্র পারিবারিক লোকজনদের নিয়ে সোসাল ডিসটেন্স বজায় রেখে নিয়ম রক্ষা মধ্যে দিয়েই জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা সারা হয় শতাব্দী প্রাচীন দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বিখ্যাত বিনশিরার লাহা বাড়ির পারিবারিক জগন্নাথদেবের মন্দিরে।আর এবারর রথযাত্রা বন্ধের পাশাপাশি জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রায় অংশ নিতে না পারায় মুষড়ে পড়েছে এলাকাবাসি।কেননা সারা বছর ধরে তারা এই রথ যাত্রা ও প্রভুর স্নানযাত্রার দিকেই তাকিয়ে বসে থাকতেন।আর এই রথযাত্রার মেলাকে ঘিরে আত্মীয় কুটুমে ভরে উঠত গ্রাম। কিন্তু লকডাউন তাতে থাবা বসানোয় খুবই
মর্মাহত বাসিন্দারা।
দক্ষিন দিনাজপুর জেলার হিলি থানার তিওড় অঞ্চলের বিনশিরা গ্রামের সর্বেশ্বর লাহা বাংলা ১৩২৯ সালে জগন্নাথ দেবের স্বপ্নে আদেশ পাওয়ায় এই মন্দির স্থাপন করেন। স্বপ্নে নির্দেশিত উড়িৎষার পুরী এলাকার একটি জমির উপর থাকা নিম গাছ কেটে সেখানের পান্ডাদের মধ্যমে তৈরি করেন জগন্নাথদেব, সুভদ্রাদেবী ও বলরামদেবের মুর্তি।তারপর সেই তিনটি মুর্তি পুরী থেকে বিনশিরা গ্রামে নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করেন মন্দিরে।সেই থেকে নিয়ম নিষ্ঠা মেনে প্রতিদিন চারবেলা ভোগের মধ্যমে সর্বেশ্বর লাহার চার পুরুষ ধরে এই মন্দিরে জগন্নাথদেব, সুভদ্রা ও বলরামদেবের পুজো ও রথযাত্রার দিন নিয়ম করে তাদের মাসির বাড়ি পাঠিয়ে আসছিলেন।কিন্তু এবার লকডাউনের জেরে এতবছরের এতিহ্য বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল এবারের লাহা বংশের পারিবারিক শরিকরা।
এই বছরে পারিবারিক পুজোর দায়িত্বে থাকা দীপংকর দাস জানান করোনা সক্রমনের দিকে তাকিয়ে ও লকডাউনের বিধি মেনে অনান্যবার অনেক পুর্নার্থীদের নিয়ে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার পুজো অনুষ্ঠান করলেও এবার তারা আজকে শুধু মাত্র পরিবারের কয়েকজন মিলে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা সেরেছেন। তাও রিতিমত সোসাল ডিসটান্স মেনে। পাশাপাশিসেই করোনা সক্রমন যাতে এলাকায় না ছড়িয়ে পড়ে তারজন্য সরকারি নির্দেশমত রথযাত্রা বন্ধ রেখেছেন। দীর্ঘ কয়েক দশক পর লকডাউনের গেড়োয় তাদের পরিবার প্রসিদ্ধ এই রথযাত্রা উতস্যব বন্ধ রাখতে বাধ্য হলেন বলে তিনি জানান।
No comments