বাড়িতে মেয়ের আগমনে নিজের ডায়োগনেস্টিক সেন্টারে সমস্ত পরীক্ষা বিনামূল্যে ঘোষণা ডায়োগনেস্টিক সেন্টারের মালিকের
শিব শঙ্কর চ্যাটার্জি, নিউজ অনলাইন: ভারতীয় সংস্কৃতিতে কন্যা সন্তানকে মাতৃরুপে চিন্তা করা হয়। কিন্তু তার মাঝেও এখনো আমাদের সমাজে কন্যাভ্রূণ হত্যার একটি প্রবণতা রয়ে গেছে। কিন্তু এই কন্যা সন্তান লাভ করা যে কতটা সৌভাগ্যের তা অনেকেই উপলব্ধি করতে পারেন না। আর যারা এই সত্যটা উপলব্ধি করতে পারেন তারা কন্যা সন্তান লাভের পর কন্যা সন্তান আগমনের দিনটিকে অন্য রকম ভাবে আনন্দে ভরিয়ে তোলেন। ঠিক যেমন করেছেন বালুরঘাট শহরের একটি বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারের কর্ণধার প্রমিত লাহা। বালুরঘাট শহরে প্রমিত বাবুর বেশ কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা সহ বিভিন্ন পরীক্ষার ল্যাব রয়েছে। সেই ল্যাব গুলিতে প্রমিত বাবু তার কন্যা সন্তান লাভের আনন্দে আজ যত রোগী বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে আসবেন তাদের সমস্ত পরীক্ষার খরচ বিনামূল্যে করে দিয়েছেন। মূলত দেখা যায় কন্যা সন্তানের পিতারা ঘটা করে কন্যাকে শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে থাকেন। কিন্তু কন্যার আগমনে ঘটা করে সেই দিনটিতে পালন করতে দেখা যায় খুব কম মানুষকেই। ঠিক যেমন করেছেন প্রমিত বাবু, প্রমিত বাবু জানিয়েছেন তিনি আজকের দিনটি কন্যার গৃহ প্রবেশ উৎসব হিসেবে পালন করছেন। প্রতিবছর বাংলার ঘরের মেয়ে আগমনে বাংলার আকাশ-বাতাস যেভাবে উৎসব মুখর হয়ে ওঠে বাংলার প্রতিটি মানুষ সকলের সঙ্গে সেই আনন্দ ভাগ করে নেন, ঠিক সেভাবেই প্রমিত বাবু তার ঘরে ছোট্ট উমার আগমনে তার খুশি অন্যান্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে আজকের এই উদ্যোগ নিয়েছেন। শুধু তার ডায়াগনস্টিক ল্যাব গুলোতে নয় প্রমিত বাবু অন্যান্য যে সমস্ত সার্ভিস দিয়ে থাকেন সেই সমস্ত সার্ভিস গুলির সব কিছুই আজ তিনি বিনামূল্যে প্রদান করছেন। আজও যখন হরিয়ানা, পাঞ্জাব সহ বিভিন্ন রাজ্যের কন্যাভ্রূণ হত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে চলেছে ঠিক তখনই এই বাংলায় প্রান্তিক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বাংলাদেশ লাগোয়া শহর বালুরঘাটের এই ব্যবসায়ী যেভাবে তার ঘরে কন্যা সন্তান আগমনের আনন্দে মেতে উঠেছেন তা আগামী দিনে মানুষকে কন্যা ভ্রুণ হত্যা করবার আগে কিছুটা হলেও ভাবিয়ে তুলতে বাধ্য করবে বলে মনে করছে অনেকেই। পাশাপাশি কন্যা সন্তান লাভের আনন্দ ভাগ করে নিতে প্রমিত বাবুর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে আসা রোগীর পরিবার থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই।
No comments