রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু আমডাঙ্গায়, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার আব্বাস সিদ্দিকীর
সৌভিক সরকার, নিউজ অনলাইন:
আমডাঙ্গা আবার অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে শাসক দল তৃণমূল এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন আহালে সুন্নাত এ জামাতের প্রধান আব্বাস সিদ্দিকী।সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় ও দলিত হিন্দুদের "বঞ্চনা" রুখতে ও তাঁদের স্বার্থ রক্ষায় অন্তত চুয়াল্লিশটি বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর মনোনীত প্রার্থীরা লড়বেন ঘোষণা করার পর থেকে আব্বাস সিদ্দিকী যে ক্রমশই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন রাজ্য রাজনীতিতে তা প্রমান করছে রবিবার রাতের আমডাঙ্গার সংঘর্ষ। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে পোস্টকে ঘিরে আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামী ও তৃণমূলের সংঘর্ষের পরে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী ঘটনার জন্য তৃণমূল কে দায়ী করে সরাসরি আক্রমণ করেছেন আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকার রহমানকে। তাঁর মতে,আমডাঙায় একশো দিনের কাজ পেতে গিয়ে তাঁর সংগঠনের সাথে যুক্ত ও তাঁর অনুগামীর বাবাকে তৃণমূলের পতাকা ধরিয়ে ছবি তোলা হয়েছে আর সেই ছবি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে ভাইরাল করা হয়েছে। তাঁর আরো অভিযোগ, এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাঁর সংগঠনের ছেলেদের ওপরে হামলা করেছে তৃণমূল আর আহালে সুন্নাতে জামাতের নিরীহ, নির্দোষ সদস্যদের কেই একপেশে ভাবে আটক করেছে পুলিশ। এই বক্তব্যের সর্বৈব বিরোধিতা করেছেন আমডাঙ্গার তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর মতে তৃণমূলের ওপরে বিনা কারণে দোষারোপ করা হচ্ছে। ঘটনার দায় বিজেপি সিপিএমের। অথচ উল্লেখযোগ্য ভাবে আমডাঙ্গার রবিবার রাতের ঘটনায় পুলিশ কর্মীদের মারধর (আই পি সি ৩৫৩), ৮ ন্যাশনাল হাইওয়ে এক্ট সহ একাধিক অভিযোগে আহলে সুন্নাতে জামাতের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে বারাসাত আদালতে তোলা হয় সোমবার। তাঁদের এগারো দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এদিন অভিযুক্তদের আইনজীবি জামির হোসেন জানান, পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট ভাবে গ্রেপ্তার করেছে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর লোকজনকে। আব্বাস সিদ্দিকীর শাসক দলের ষড়যন্ত্র চলছে যার শিকার নিরীহ মানুষ।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল বিধায়ক রফিকার রহমান রবিবারের ঘটনার পেছনে সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল পোস্টের উল্লেখ করেছেন। আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীর বাবার ছবিকে ঘিরে বিতর্ক তাও মেনে নিয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সংঘর্ষের দায় চাপিয়েছেন বিজেপি সিপিএমের ওপরে।বিজেপি বা সিপিএমের কোনো কর্মী গ্রেপ্তার হন নি বা ওই ঘটনায় তাঁদের কোনো সংস্রব নেই জানিয়েছে বিজেপি ও সিপিএম। অর্থাৎ কৌশলে বিজেপি সিপিএমকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক শত্রু জ্ঞান করে তৃণমূল আহলে সুন্নাত এ জামাতের নামোচ্চারণ করছে না তৃণমূল নেতৃত্ব।কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত,আব্বাস সিদ্দিকীর সংগঠন সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসালে লাভ হতে পারে তৃণমূলের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। ভোট বড় বালাই।এখন প্রশ্ন, আব্বাস সিদ্দিকীর সংগঠন কি ভোটে ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে চলেছে? আর তাই কি ডরাচ্ছে তৃণমূল? আহলে সুন্নাত এ জামাতের নেতা শাহজাহান আলি তাই দাবী করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, সংখ্যালঘু এলাকায় আব্বাস সিদ্দিকীর সংগঠনের উত্থানকে ঘিরে সিঁদুরে মেঘ দেখছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এখন দেখার আব্বাস সিদ্দিকীর সংগঠন আগামী দিনে তৃণমূলের কতটা শিরঃপীড়ার কারণ হয়।
No comments