গ্রামের সালিশি সভায় নির্ধারিত জরিমানার টাকা না দিতে পারায় আত্মঘাতী যুবক
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, নিউজ অনলাইন: গ্রামের সালিশি সভায় তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল গ্রামের বাসিন্দারা। সেই টাকা দিতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলো এক ব্যক্তি। শনিবার সকালে বাড়ির সংগ্নন একটি গাছ ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার থানা আলাগুলি গ্রামে।শনিবার সকালে নন্দকুমার থানার পুলিশ গিয়ে মোহন মন্ডল (৫৩) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
জানা গিয়েছে গত গ্রামের বাসিন্দা চন্দন বেরার মুম্বাইতে ইলেকট্রিকের ঠিকাদারি কাজ করেন। গত কয়েক মাস আগে গ্রামের ৬-৭ জন যুবক নিয়ে মুম্বাইতে কর্মসূত্রে পাড়ি দেন। কাকা মোহন মন্ডল, ভাইপো শ্যামল মন্ডল সহ বেশ কয়েকজন যুবক মুম্বাই উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গত দুমাস আগে ভাইপো শ্যামল মন্ডল (৩২) কাজ করার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট মৃত্যু হয় মদনের পরিবারের দাবি। সেখানকার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করেন। গ্রামবাসী ও পরিবারের সদস্যদের কাউকে না জানিয়ে কাগজে সই করে ভাইপো শ্যামলের মৃতদেহটি গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।যদিও এ ব্যাপারে ঠিকাদার চন্দন বেরা কোন রকমের সহযোগিতা করেননি বলে পরিবারের অভিযোগ।
গত কয়েকদিন আগে মুম্বাই থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে মদন। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আগামী ১৪ দিন হোমকোরায়ন্টানে ছিল মোহনবাবু। এরপর গত ১২ ই জুলাই সালিশি সভা ডাকেন গ্রামবাসীরা। সেখানে মদন মন্ডলকে উপস্থিত থাকার জন্য জানানো হয়। গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত মতে ওই সালিশি সভাতে হাজির হয় মোহনবাবু। ওই সালিশি সভাতে মদনবাবুকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় গ্রামের পক্ষ থেকে বলে অভিযোগ। আরও হুমকি দেওয়া হয় ওই টাকা না দিলে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে মৃত মদনবাবুর পরিবারের অভিযোগ।
এই ঘটনার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মদনবাবু তার পরিবারের অভিযোগ। এত টাকা ও অপমানে আত্মহত্যা সিদ্ধান্ত নেয় মদনবাবু এমনটাই পরিবারের অভিযোগ। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি গাছে লাইলন দড়ি ফাঁস লাগানো অবস্থায় মোহনবাবুর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পায় পরিবারের লোকেরা।ঘটনা খবর দেওয়া হয় নন্দকুমার থানা পুলিশকে। গাছ থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য তমলুক মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
যদিও মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ করে বলেন সালিশি সভায় টাকা জরিমানা করার জন্যই টাকার কথা ভেবে আত্মঘাতী হয়েছেন। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক যুবক মুম্বাইতে মারা গেছিল। সেখানে সই করার কারনে গ্রামের সালিশি সভা থেকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল।স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপ্না মাঝি বলেন গ্রামের একটি সালিশি সভার বসার কথা স্বীকার করে নেন। সেখানে টাকা দেওয়ার জন্য মোহনবাবুকে কোন চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। গ্রামের একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কিভাবে সুস্থভাবে সমাধান করা হয় তার জন্য একটি সভা বসেছিল।সেখানে প্রধানের কোন এক্তায়ার থাকেনা, গ্রামীণ ভাবে আলোচনা করা হয়। এখানে আমার কিছু বলার করার নেই।গ্রামে শাসন পুরোপুরি আলাদা , এখানে আমার কিছু ভূমিকা নেই।
No comments