ধীরে ধীরে সব খুলে গেলেও, কবে খুলবে সিনেমা হল? প্রশ্ন তুললেন সিনেমা হলের মালিক সহ কর্মীরা
শিব শঙ্কর চ্যাটার্জি, নিউজ অনলাইন: আনলক টু স্টেজ পেড়িয়ে আমরা আনলক থ্রি'র দিকে পা বাড়াতে চলেছি। সেদিকে লক্ষ রেখেই ধীরে ধীরে শপিং মল, হোটেল, রেঁস্তোরার পরিষেবা খুলে যাচ্ছে হাতের নাগালের মধ্যে । রাস্তায় ভিড় বাড়ছে। বাসে, অটো, টোটোতেও গাদাগাদির ছবি! তবু এখনও লকডাউনে আবদ্ধ সিনেমা হল। সিনেমা হল গুলোকে দেখলে এখন মনে হয় যেন ভূতের হানাবাড়ি। কবে খুলবে জানা নেই কারো , সমস্যায় হল কর্মীরা।
একেই মাল্টিপ্লেক্স এর দাপটে পুরনো সিংগিল স্ক্রিনের সিনেমা হলগুলো সংকটের মধ্যে পড়ে খাবি খাচ্ছে ।তবু এর মধ্যেও মফস্বল এবং আধা মফস্বল ও জেলা সদরের সিংগিল স্ক্রিনের সিনেমা হল গুলি কোন ক্রমে বেচে থাকার লড়াই চালিয়ে আসছিল।এই লড়াইয়ে অনেক সিনেমা হল নিজেদের লড়াই জারি রাখতে না পারার দরুন বন্ধ করে দিতেও বাধ্য হয়েছিল। কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন বহু কর্মী। তবুও কোনক্রমে দাতে দাত চেপে কিছু সিনেমা হল এখনও মাথা উচু করে বেচে ছিল।কিন্তু এবার গোদের উপর বিষ ফোড়ার মত মাথা চাড়া দিল করোনা। বর্তমানে করোনা সক্রমন রুখতে লকডাউনের কোপে সেই বেচে ওঠার লড়াই দূর অস্ত। অস্তিত্বই টেকে কিনা সেটাই দেখার। এবারে লকডাউনে সমস্যা বাড়ছে সিনেমা হলের কর্মীদেরও। দীর্ঘ পাচ মাস ধরে বন্ধ হলের ঝাঁপ। সংকট বাড়ছে হল কর্মীদের।
বালুরঘাটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হল কর্মীর অভিযোগ, সবই ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে। কোথায় মানা হচ্ছে সোশ্যাল ডিস্টেনসিং? কোনও বালাই নেই। কী বাস, কী অটো বা টোটো, কি বাজারে! একই হাল সর্বত্র। অথচ বন্ধ করে রাখা হয়েছে সিনেমা হল। তাকে দুখের সাথে আক্ষেপের স্বরে বলতে শোনা গেল এখনও পর্যন্ত সরকার খোঁজই নেয়নি তাদের। বেচে আছেন না মরে গেছেন। দেখা মেলেনি নেতা, মন্ত্রীদের। এখনও মালিকেরা ক্ষেপে ক্ষেপে কিছু কিছু করে বেতন দিয়ে আসছে। তা দিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে সঙ্কট বাড়ছে । কিন্তু মালিকের ও তো দেওয়ার একটা শেষ আছে। তারও তো কোন রোজগার নেই অথচ বিদ্যুৎ বিল থেকে সিনেমা হলের আনুষাংগিক খরচ মেটাতে হচ্ছে। তিনিই বা পাবেন কোথায়। তাই হয়তো সেদিন আর বেশি দূর নয় যেদিন মালিক কে থেমে যেতে দেখবে সিনেমা হল কর্মীরা। তারপরের অন্ধকারের দিনের কথা চিন্তা করলেও পরিবার নিয়ে শিউরে উঠতে হয় বলে তিনি প্রায় কেদেই ফেললেন।
লকডাউনের জেরে গত ১৭ মার্চ থেকে পাচ মাস ধরে বন্ধ রাজ্যের সিনেমা হলগুলি। দিন দিন আর্থিক ক্ষতির বহর বেড়েই চলেছে। কর্মীদের বেতন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন অনেক হল মালিক। অনেকে আবার হলের বিদ্যুতের বিল দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে এই বাংলার বিভিন্ন জেলার সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হলগুলি।শুধু সিনেমা হল খোলাই নয়, দর্শক কবে থেকে আগের মতো সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখার সুযোগ করতে পারবেন তা নিয়েও প্রচুর সংশয় রয়েছে।
সম্প্রতি ট্যুইটারে ৬ হাজার ৪০০ জনের মধ্যে একটি সমীক্ষা করে দেখা হয়। যেখানে তাঁদের জিগ্গেস করা হয়েছিল যে সিনেমা হল খোলার কতদিনের মধ্যে তাঁরা হলে যাবেন? সেক্ষেত্রে ১৪ শতাংশ বলেছেন এক সপ্তাহের মদ্যে, ৪ শতাংশ বলেছেন ১৫ দিন পর, ১৭ শতাংশ ভোট দিয়েছেন এক মাসে। বাকি ৬৬ শতাংশ এর কোনওটাই করতে রাজি নন বলে ভোট দিয়েছেন। অর্থাৎ সিংহভাগ দর্শকই এখন হলে যেতে চাইছেন না।
No comments