শৌচাগার যখন বিপদ, এবার বারাসাত পুরসভার পক্ষ থেকে সুলভ শৌচালয়ে শুরু হচ্ছে কড়া নজরদারি
সৌভিক সরকার, নিউজ অনলাইন: শৌচাগার যখন বিপদ।।
শৌচাগারকে যতই সংক্রমণের উৎস চিহ্নিত করা হোক, রাস্তায় ঘাটে ও বাজারে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য শৌচাগারগুলিতে নেই কোনোরকম নজরদারি। নেই মানুষের সচেতনতা। মানুষ স্বাস্থ্য নির্দেশিকা না মানায় বিপদ বাড়ার আশংকা। বারাসাত শহরজুড়ে এরকম বহু শৌচাগার রয়েছে যেখানে মানুষকে অনেকক্ষেত্রে ন্যূনতম স্বাস্থ্য সচেতনতা মানতে দেখা যাচ্ছে না। বিপদের অশনিসংকেত আছে বুঝে দেরিতে হলেও বারাসাত পৌরসভার প্রশাসনিক বোর্ড পদক্ষেপ নেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।
ইউনাইটেড স্টেটস থেকে প্রকাশিত পিজিক্স অফ ফ্লুইড জার্নালে গবেষণাভিত্তিক ফলে প্রকাশিত যে কোনও সংক্রমিত ব্যক্তি টয়লেট ব্যবহার করার পরে তাতে ব্যাপক পরিমানে ভাইরাস থাকতে পারে এবং সে কারণে শৌচাগারকে সংক্রমণের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত।
সংক্রমিত ব্যক্তি আইসোলেশন পর্যায়ে সাধারণভাবে বাড়িতে থাকেন, ফলে বাথরুম শেয়ার করতেই হবে। সাধারণ শৌচাগারের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে- ফলে, কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। এইসব কারণে মহামারী প্রতিরোধের জন্য শৌচাগার পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
অর্থাৎ টয়লেট থেকে ছড়াতে পারে কোভিড সংক্রমণ। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে রাস্তার সুলভ শৌচাগার সহ জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য নির্মিত অধিকাংশ টয়লেটগুলিতে যাচ্ছেন যে সব মানুষ তাঁরা কোনো স্বাস্থ্য নির্দেশিকা না মেনে বিপদ ডেকে আনছেন ।পাশাপাশি অধিকাংশ ক্ষেত্রে, শৌচাগারগুলিতে নেই কড়াকড়ি ।শহর বাজারে নিয়ম ভাঙার প্রতিযোগিতায় নামা মানুষজন শৌচাগার ব্যবহার করছেন মাস্ক ও স্যানিটাইজারের নিয়ম না মেনে। বারাসাত শহরে আংশিক লকডাউনের সময় শৌচাগারগুলিতে যাওয়া বেপরোয়া মানুষজনের চিত্র প্রমান দিচ্ছে স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনাচিন্তা স্রেফ কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ।
বারাসাত পৌরসভা জুড়ে কোভিড মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে আংশিক লক ডাউন। মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক শেষে বারাসাতে 'সেফ হোম'-এর পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে পৌরসভা প্রশাসন বাড়িতে বাড়িতে শৌচাগারে বিশেষ লক্ষ্য রাখার কথা জানায়। কিন্তু জনগণের ব্যবহারের জন্য শৌচাগারগুলি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি । বারাসাত শহরে একটি শৌচাগার বিশিষ্ট পরিবাবের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁদের এই সেফ হোমে নিয়ে আসা হবে বলে গত মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন কার্যনির্বাহী পৌর প্রশাসক অশনি মুখোপাধ্যায়। কিন্তু বিভিন্ন মার্কেট কমপ্লেক্সে থাকা শৌচাগার ও সুলভ শৌচালয়গুলিতে বিধিনিষেধ পালন করা হচ্ছে না কোনো ভাবেi ।সুলভ শৌচাগারে মানুষকে ঢুকতে দেখা যাচ্ছে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে। দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানালেন,সতর্ক করলে ও মানুষ কর্ণপাত করছে না। কিছু মার্কেট কমপ্লেক্সে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারে জোর দিলেও সেগুলি পরীক্ষা করে আলাদা ভাবে দূষণমুক্ত করা হয় নি। ফলে শৌচাগারগুলি থেকে রোগ সংক্রমণের আশংকা বাড়ছে। বারাসাতের বিশিষ্ট চিকিৎসক ধীমান চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অতি গুরত্বসহকারে শৌচাগারগুলিতে নজর দেওয়া উচিত। বারাসাত পৌরসভার বোর্ড অফ এডমিশস্ট্রেটর্স-য়ের দায়িত্বে থাকা অশনি মুখোপাধ্যায় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে শহর বাজারে জনসাধারনের ব্যবহারের জন্য শৌচাগার নিয়ে সতর্কতা তাঁদের নজর এড়িয়ে গেলেও এবার সকল শৌচাগারে বাড়ানো হচ্ছে নজরদারী।
No comments