বাড়ি ফিরতে পায়ে হেঁটে শিলিগুড়ি থেকে হুগলির পান্ডুয়ার পথে পাঁচ যুবক
বিশ্বজিৎ সরকার, নিউজ অনলাইন:
পকেটে রয়েছে সামান্য মাত্র সামান্য টাকা। লকডাউনে একমাস আটকে থাকার পরই হঠাৎ বাড়ি থেকে বের করে দেয় বাড়ির মালিক। এর পরেই পাঁচজন যুবক সিদ্ধান নেন যে পায়েই হেঁটেই বাড়ি ফিরবেন হাওড়ার পান্ডুয়াতে। শিলিগুড়ির মাটিগাড়াতে নির্মান শ্রমিককের কাজে এসে ছিলেন তারা। এবং কাজ করতে করতে শুরু হয় লকডাউন। এই লকডাউনের কারণে বাড়ি ফিরতে পারেনি। এই ভাবেই প্রায় এক মাস কেটে যায়। যা টাকা পয়সা ছিল তা প্রায় শেষের দিকে। এরপর গতকাল হঠাতই সে বাড়িতে ভাড়া থাকতো সেই বাড়ির মালিক বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমনকি তাদের বাড়ি থেকে তারিয়ে। এরপর ওই পাঁচ যুবক তাদের ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু ঠিকাদার তাদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ না করে পালিয়ে যায়। এরপর কোন রকম উপায় না সেই মাটিগাড়া থেকে বেরিয়ে পড়ে পায়ে হেটে। শনিবার বার মাটিগাড়া থেকে বের হয়। এরপর এদিন দুপুরে এসে পৌঁছায় ফাঁসিদেওয়া ব্লকের পশ্চিম মাদাতি টোল গেটে। তাদের মধ্যে থেকে মহম্মদ ইমতেয়াজ বলেন যে পকেটে নেই টাকা তার উপর বাড়ির মালিক খালি বার বার এসে আমাদের উপর পেশার দিচ্ছিল। এমনকি খাবার জল পর্যন্ত নিতে দিচ্ছিল না। এরপর আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তাই পাই হেঁটেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। গতকাল সকালে মাটিগাড়া থেকে বার হয়েছি। এরপর এক দিন এক রাত পার করে এদিন এই ঘোষপুকুরে এসে পৌছাই। অপর একজন যুবক শেখ তমিজুল বলেন যে আমরা বাড়ির যাবার জন্য পুলিশকেও বলেছি কিন্তু ঘোষপুকুর থানার পুলিশ আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এবং আমাদের বলা হয় যে তারা কিছু করতে পারবেন না। তাই পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরতে। এরপর সেখান থেকে চলে আসি। কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না। রাত্রি বেলা খালি বিস্কুট আর জল খেয়েছি। আর যতক্ষণ প্রাণ আছে হেটে যাব। মাঝে মাঝে মনে হয় যে এতটা পথ পেরোতে মরেই যাব। তাই সরকারের কাছে আবেদন যাতে আমাদের কোন ব্যবস্থা করে দেয় বাড়ির পৌছে দেবার জন্য। তবে প্রশ্ন উঠেছে যে রাজ্য সরকার সরকার থেকে বারবার বলা হয়েছে যে লকডাউনের সময় কাউকে বাড়ি থেকে তারিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু তার উল্টো চিত্রিই দেখা গেল। অপরদিকে বলাই যে মনের অদম্য সাহস নিয়েই পায়ে হেঁটে হুগলির পথে পাঁচ যুবক।
No comments