কল্যাণী জহরলাল হাসপাতালে বিরল পদ্ধতিতে জন্ম নিল শিশু
নিউজ অনলাইন: নদিয়ার গৃহবধূ স্বাতী বারিক (২৬), ছোটবেলায় এসিড খেয়ে ফেলার কারণে তার খাদ্যনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল এবং টিউব ফিডিংয়ের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু দুর্বল পুষ্টি এবং একাধিক জটিলতা সত্বেও, তিনি ১৭ই মে রাতে কল্যাণী জহরলাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে একটি পুরুষ বাচ্চা জন্ম দিয়েছেন।
কল্যাণী জহরলাল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৃগাঙ্কমৌলি সাহা জানান, " দেড় মাসের অন্তঃসত্বা অবস্থায় স্বাতী বারিক আমাদের হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনি ছোট বেলায় একসময় এসিড খেয়ে ফেলেছিলেন। তিনি খেতে পারলেও গিলতে পারতেন না। এই পরিস্থিতিতে ২০১১ সালে অপারেশন করে স্বাতীর পেট ফুটো করে ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্যে নরম প্লাস্টিকের টিউব ঢোকানো হয়। এর মেডিক্যাল নাম "ফিডিং জেজুনোসটমি"। প্রতিদিন সিরিঞ্জ দিয়ে তরল খাবার , জল ওই টিউবে ঢুকিয়ে দিতে হয়।
এমনভাবেই বেঁচে রয়েছেন তিনি। এমন এক অন্তঃসত্বার পেট থেকে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার নজির এই দেশে নেই। কল্যাণী হাসপাতালের চিকিৎসকদের চেষ্টায় এমনই এক বিরল নজির তৈরি হলো কল্যাণী হাসপাতালে।
স্বাতীকে প্রতি সাতদিন অন্তর হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হতো। শিশু পুষ্টির জন্য একদিন "টোটাল পেরেন্টাল নিউট্রিশন" ও পরের দিন "হিউম্যান এলবুমিন" শিরায় ইনকজেশনের মাধ্যমে দেওয়া হতো। এর সাহায্যে গর্ভস্থ শিশুটি পুষ্টি পেত। এই ভাবে ৯ মাস পর্যন্ত শিশুটির পূর্ণাঙ্গ বৃদ্ধি পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা চলতে থাকে। গত সোমবার ১৭ই মে ৯ মাস পূর্ণ হওয়ার পর স্বাতী ১৮০০ গ্রাম ওজনের একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। ডাঃ মৃগাঙ্ক মৌলি সাহা জানান," এর আগে জরায়ুর কানস্যার অপারেশনে একই সাথে রোগীকে কেমোথেরাপি দিয়ে সুস্থ করেছেন। এবার তাদের টিমের মুকুটে নতুন পালক যোগ হলো। দেশের সরকারি বা বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই এইভাবে শিশুকে ভূমিষ্ঠ করার উদাহরণ এর আগে ছিলোনা।
No comments